দেশনায়ক নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু – কিছু জানা-অজানা তথ্য
দেওয়া রইলো নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু সম্পর্কিত কিছু জানা অজানা তথ্য ।
১৮৯৭ – ২৩শে জানুয়ারি, শনিবার বেলা ১২-১৫মিনিটে কটকে জন্মগ্রহন।
১৯০২ – জানুয়ারি মাসে ব্যাপটিস্ট মিশন -কতৃক পরিচালিত প্রটেস্টন্ট ইউরোপীয় স্কুলে-এ (পি.ই.স্কুল) প্রবেশ। ১৯০২ -১৯০৮ সাত বছর এই স্কুলের ছাত্র।
১৯০৯ – জানুয়ারিতে কটকের রাভেন শ কলেজিয়েট স্কুলে চতুর্থ প্রবেশ। এবং প্রধান শিক্ষক শ্রীযুক্ত বেণীমাধব দাসের -এর সান্নিধ্য আসা।
১৯১৩ – মার্চ মাসে প্রবেশিকা পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন। এবং ঐ বছরেই কটক ত্যাগ করে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে প্রবেশ।
১৯১৪ – গ্রীষ্ম অবকাশে গোপনে তীর্থ যাত্রায় গমন। উত্তেজনাপূর্ণ অভিজ্ঞতার পর গৃহে প্রত্যাবর্তন এবং টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত। প্রথম মহাযুদ্ধের সূচনা সেই বছর।
১৯১৫ – ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষাতে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ। দর্শনে অনার্স সহ ডিগ্রি পরীক্ষায় ভাল ফল করবার সংকল্প।
১৯১৬ – অধ্যাপক ওটেন -এর ভারতীয় ছাত্রদের প্রতি দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে প্রেসিডেন্সি কলেজে ছাত্র ধর্মঘট। অধ্যাপক ওটেন লাঞ্ছনার ঘটনায় দোষীরূপে কলেজে এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার। অধ্যকের এই সিদ্ধান্তে ভবিষ্যৎ জীবনের গতি নির্ধারিত হল আত্মবিশ্বাস ও উদ্যমশীলতা গড়ে উঠলো।
১৯১৭ – স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে জুলাই মাসে স্কটিশ চার্চ কলেজে দর্শনে তৃতীয় বার্ষিক শ্রেণীতে যোগদান। তৃতীয়বর্ষ সৈনিক জীবন ও তৎসংক্রান্ত উত্তেজনায় দিনযাপন।
১৯১৯ – দর্শনে প্রথম শ্রেণীতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার। ১৫ই সেপ্টেম্বর জাহাজে ইংল্যান্ডে আই.সি.এস পরীক্ষার উদ্দেশে যাত্রা। ২৫ অক্টোবর নাগাদ লন্ডনে পদার্পণ।কেমব্রিজ ট্রাইপস্ ও সিভিল সার্ভিসের পঠনপাঠন শুরু নভেম্বর মাস নাগাদ।
১৯২০ – আই. সি. এস পরীক্ষাতে চতুর্থ স্থান অধিকার।
১৯২১ – কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে ট্রাইপস ডিগ্রী অর্জন। আই. সি. এস -এর চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন।
১৯২২ – উত্তরবঙ্গ বন্যা ত্রাণে স্চ্ছোসেবী রূপে যোগদান। গয়া-কংগ্রেসে দেশবন্ধুর নেতৃত্বে ” স্বরাজ্য বা স্বরাজ ” দল প্রতিষ্ঠা।
১৯২৩ – নিখিলবঙ্গ যুব সম্মেলনের সভাপতি পদে নির্বাচিত। বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসের সম্পাদক এবং দেশবন্ধু প্রতিষ্ঠিত ‘ফরোয়ার্ড’ পত্রিকার তত্ত্বাবধায়ক।
১৯২৪ – ‘স্বরাজ্য’ দলের কলিকাতা মিউনিসিপ্যালিটির নির্বাচনে জয় লাভ, মেয়র দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, ও সুভাষচন্দ্র বসুর ‘চিফ একজিকিউটিভ অফিসার ‘ -এর পদ গ্রহন। অক্টোবরে পুনরায় কারাবরণ।
১৯২৪-১৯২৭ – মে মাস অবধি বর্মার মান্দালয় কারান্তরালে দিন যাপন।
১৯২৫ – ১৬ই জুন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ এর মানবলীলা সম্বরণ।
১৯২৬ – বন্দী অবস্থায় বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভায় নির্বাচিত।
১৯২৭ – ডিসেম্বর, নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে বৃত।
১৯২৮ – মে মাস, মহারাষ্ট্র প্রাদেশিক সম্মেলন সভাপতির ভাষণ প্রদান। ডিসেম্বর, জাতীয় কংগ্রেসের কলিকাতা -অধিবেশনে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন এবং জেনারেল অফিসার কমান্ডিং পদগ্রহণ। ঔপনিবেশিক স্বায়ত্ত শাসন প্রস্তাবের বিরোধীতা এবং পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি।
১৯২৯ – ছাত্র-যুব-প্রাদেশিক-রাজনৈতিক সভায় সভাপতির ভাষণ:৩০শে মার্চ রংপুর বঙ্গীয় প্রাদেশিক সম্মেলন, ২১শে এপ্রিল ময়মনসিংহ জেলা সম্মেলন, ২৫শে এপ্রিল শ্রীহট্ট জেলা ছাত্র – সম্মিলনী , ২২শে জুন যশোহর-খুলনা যুব সম্মেলন, ৭ই জুলাই যশোহর জেলা সম্মেলন, ১৮ই জুলাই বরিশাল জেলা রাষ্ট্রীয় সম্মেলন, ২১শে জুলাই হুগলী জেলা ছাত্র সম্মেলন, ১৬ই আগষ্ট ই. আই. আর. রেল( বর্তমান পূর্ব রেল) ইউনিয়নের শ্রমিক সমাবেশ , ১৭ই আগষ্ট রাজশাহী জেলা ছাত্র সম্মেলন, সেপ্টেম্বর হাওড়া জেলা যুব সম্মেলন, ১৯ অক্টোবর লাহোর পাঞ্জাব ছাত্র সম্মেলন, ২৮ নভেম্বর মধ্যপ্রদেশ যুব সম্মেলন, ১ডিসেম্বর অমরাবতীতে মধ্যপ্রদেশ ও বেরার ছাত্র সম্মেলন, ২৭ডিসেম্বর মেদিনীপুর জেলা যুব সম্মেলন, ৩১শে ডিসেম্বর লাহোর জাতীয় কংগ্রেসে-অধিবেশনে ভাষণ ও প্রতি সরকার গঠনের প্রস্তাব।
১৯৩০ – জানুয়ারিতে কারাবরণ; আগষ্টে বন্দী অবস্থায় কলকাতা কর্পোরেশন মেয়র হিসাবে নির্বাচিত।
১৯৩৩ – জেল থেকেই ইউরোপ গমন।
১৯৩৩-৩৬ – স্বল্পকালীন বিরতির ব্যতীত ইউরোপে অবস্থান। ইতালিতে মুসোলিনি, জার্মানিতে থিয়ের ফেলডার, আয়ারল্যান্ডের ডি.ভ্যালোরা, ফ্রান্সে রঁমা রোঁলার প্রমুখের সঙ্গে সাক্ষাত্।
১৯৩৬ – ১১ই এপ্রিল স্বদেশে প্রত্যাবর্তন, বোম্বাই (মুম্বাই)তে অবতরণ ও গ্রেফতার।
১৯৩৬-৩৭ – অন্তরীণ। ১৭ই মার্চ মুক্তি ও ইউরোপ গমন। Indian Struggle-এর প্রকাশ, ডিসেম্বরে অসম্পূর্ণ – আত্মজীবনী An Indian Pilgrim রচনা।
১৯৩৮ – জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি পদে নির্বাচিত। হরিপুরা অধিবেশনে ঐতিহাসিক ভাষণ। মাঘ ১৩৪৫-এ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “দেশনায়ক ” রচনা। ২৩শে জানুয়ারি শান্তিনিকেতনে সংবর্ধনা।
১৯৩৯ – ত্রিপুরী- কংগ্রেসে সভাপতিরূপে পুনঃনির্বাচিত, পদত্যাগ ও ফরওয়ার্ড ব্লক দল গঠন , ১৮ই আগষ্ট ” মহাজাতি সদন” -এর কবিগুরু -কর্তৃক ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন।
১৯৪০ – ১৯শে মার্চ রামগড়, আপস-বিরোধী সম্মেলন, ১৪ই জুন নাগপুর ফরওয়ার্ড ব্লক দ্বিতীয় অধিবেশন , আহ্বান— ‘জনতার হাতে ক্ষমতা চাই’ জলপাইগুড়ি, ঢাকা প্রভৃতি অঞ্চলে সম্মেলন। নভেম্বরে জেলখানায় অনশন, এক সপ্তাহ বাদে মুক্তি ও স্বগৃহে অন্তরীণ।
১৯৪১ – ১৭ই জানুয়ারি গৃহত্যাগ ও অন্তর্ধান। ২৬শে জানুয়ারি অন্তর্ধান সংবাদ প্রকাশিত এবং প্রচারিত। ৩ রা ফেব্রুয়ারি কাবুলে প্রবেশ ২০শে মার্চ সমরকন্দ থেকে ট্রেনে মস্কোর পথে রওনা হয়ে ৩রা এপ্রিল বার্লিনে গমন।
আরো একটি ঐতিহাসিক দিন ২রা নভেম্বর। ঐ দিন Free India Centre বা আজাদ হিন্দ সঙ্ঘের প্রথম সভাটি ডাকা হয়।
১৯৪২ – জার্মানি থেকে ১৯ফেব্রুয়ারি সর্বপ্রথম বেতার ভাষণ। ইন্ডিয়ান লিজিয়ন গঠন ও তার কর্মকাণ্ডের বিস্তার।
১৯৪৩ – ৮ই ফেব্রুয়ারি কিয়েল থেকে ‘সাবমেরিন’-এ জাপানের উদ্দেশে যাত্রা। ১৬ইমে টোকিও অবতরণ। ২১শে জুন টোকিও থেকে বেতারে প্রথম ভাষণ। ৪ই জুলাই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইন্ডিয়া ইন্ডি পেন্ডেন্স লীগের সভা।
১৯৪৩ – সেই বছর ৫ই জুলাই সিঙ্গাপুর মিউনিসিপ্যাল অফিসের সামনে ইন্ডিয়ান ইন্ডি পেন্ডেন্স লীগের সভাপতিরূপে জাতীয় সেনাবাহিনীর অভিবাদন গ্রহন।
২১ শে অক্টোবর “আজাদ-হিন্দ সরকার প্রতিষ্ঠা ও শপথ বাক্য পাঠ।
২৯শে ডিসেম্বর আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ পরিদর্শন।
১৯৪৪ – ৪ই ফেব্রুয়ারি আজাদ হিন্দ বাহিনীর আরাকান ফ্রন্টে অভিযান শুরু। ৩রা এপ্রিল ইম্ফল-কোহিমা রোড বিচ্ছিন্ন , ৫ই এপ্রিল কোহিমার পতন ও ইম্ফলের চারপাশে তুমুল যুদ্ধ। ২৩শে এপ্রিল ইম্ফল অবরুদ্ধ। ৪ই মে আজাদ-হিন্দ ফৌজের মায়ূ নদী অতিক্রমণ। ৫ই জুলাই চারমাস প্রবল সংগ্রাম ও অবরোধের পর কোহিমা- ইম্ফল পণ্য সরবরাহ ও সেনাবাহিনীর যাতায়াতের পথ প্রবল বর্ষার প্রকোপে বিচ্ছিন্ন হলে অবরোধ তুলে নিতে হয়। ১২ই সেপ্টেম্বর কংগ্রেস ও মুসলীম লীগের ভারত বিভাগের আপসকামী প্রস্তাবের বিরুদ্ধে রেঙ্গুন থেকে বেতার ভাষণ। ১নভেম্বর নিপ্পন সরকারের সঙ্গে টোকিওয় আলোচনা । ২২শে ডিসেম্বর কুয়ালালামপুর জন -সভায় ভাষণ।
১৯৪৫ – ৭ই জানুয়ারি সোনানে জনসভায় ভাষণ। ২১শে জানুয়ারি মহাবিপ্লবী রাসবিহারী বসুর মহাপ্রয়ান। ২৪শে এপ্রিল স্থল পথে ব্যাংকক যাত্রা, ১৮ই জুন থেকে একমাস ব্যাপী ওয়াভেল – প্রস্তাবের প্রতি কংগ্রেসের অনুকূল মনোভাবের বিরুদ্ধে বেতার প্রচার। ৪ই জুলাই দায়িত্ব গ্রহনের দ্বিতীয় বার্ষিকী, ৮ই জুলাই সোনানে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন। ৬ই ও ৯ই আগস্ট জাপানে পারমাণবিক বোমা বিস্কোরণ। ১৪ই আগষ্ট জাপানের পরাজয় স্বীকার ও আত্মসমর্পণ, ১৭ই আগষ্ট সায়গন থেকে বিমানে ভবিষ্যত কর্মসূচী রূপায়ণের উদ্দেশ্য পরিকল্পনা মতো যাত্রা।। তারপর বিতর্কিত প্লেন দুর্ঘটনা।